Description
ইসলাম আল্লাহর রাসূলগণের ধর্ম
অন্যান্য অনুবাদ 39
ইসলাম হলো বিশ্বজগতের স্রষ্টা ও নির্বাহক আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা এবং ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার সাথে তাঁর জন্য অনুগত হওয়া। ইসলামের ভিত্তি হল আল্লাহতে ঈমান আনয়ন করা, তিনিই হলেন স্রষ্টা এবং তিনি ব্যতীত অন্য সব কিছু সৃষ্ট মাখলূক। একমাত্র তিনি ইবাদতের হকদার, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। তিনি ছাড়া কেউ সত্যিকারের মাবূদ (উপাস্য) নেই। তাঁর রয়েছে সবচেয়ে সুন্দরতম নামসমূহ এবং সুউচ্চ গুণাবলি। তাঁর রয়েছে নিঃশর্ত পরিপূর্ণতা, এতে কোন অপূর্ণতা নেই। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও কেউ জন্ম দেয়নি। তাঁর সমকক্ষ ও সমতুল্য কেউ নেই। তিনি তাঁর কোন সৃষ্টির কোনো জিনিসের মধ্যে প্রবেশ করেন না এবং সৃষ্টিকুলের শরীরও গ্রহণ করেন না।
ইসলাম হলো মহান আল্লাহ তা'আলার ধর্ম, যা ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম মানুষের কাছ থেকে তিনি গ্রহণ করবেন না। এটি সেই ধর্ম যা নিয়ে সকল নবী আলাইহিমুস সালাম আগমন করেছেন।
ইসলামের মূল ভিত্তির মধ্যে রয়েছে রাসূলদের প্রতি ঈমান আনয়ন করা। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের কাছে তাঁর আদেশগুলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাসূলদের (বার্তাবাহকদের) পাঠিয়েছেন এবং তাদের কাছে কিতাব নাযিল করেছেন। তাদের মধ্যে সর্বশেষ ছিলেন মুহাম্মাদ আলাইহিস সালাম। আল্লাহ তাঁকে তাঁর পূর্বের রাসলূদের শরীয়ত রহিতকারী আল্লাহর সর্বশেষ শরীয়ত দিয়ে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তাঁকে অনেক বড় নিদর্শন দ্বারা শক্তিশালী করেছেন, যার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল বিশ্বজগতের রবের (প্রভুর) বাণী আল-কুরআনুল কারীম। মানব জাতির জানা সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ। এটি তাঁর বিষয়বস্তু, শব্দ গঠন এবং বাক্য বিন্যাসে মুজিযা (অক্ষমকারী)। এতে রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে সৌভাগ্যের পথ নির্দেশকারী সত্যের হিদায়েত। এটি আজ পর্যন্ত তার নাযিল হওয়া আরবী ভাষায় সংরক্ষিত রয়েছে। তার একটি অক্ষরও বিকৃত ও পরিবর্তন করা হয়নি।
আর ইসলামের মৌলিক নীতির মধ্যে রয়েছে ফিরিশতা ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস। কিয়ামাতের সেদিন আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের হিসাব নেওয়ার জন্য কবর থেকে পুনরুত্থিত করবেন। সুতরাং যে ব্যক্তি মুমিন অবস্থায় সৎকাজ করবে, তার জন্যে রয়েছে জান্নাতের চিরস্থায়ী সুখ। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কুফুরী (অবিশ্বাস) করবে ও মন্দ কাজ করবে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি। ইসলামের ভিত্তিগুলোর মধ্যে আরো রয়েছে যে, আল্লাহ যা ভালো বা মন্দ তাকদীর নির্ধারণ করেছেন, তাতে বিশ্বাস করা।
মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে, ঈসা 'আলাইহিস সালাম আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল এবং তিনি আল্লাহর পুত্র নন। কারণ আল্লাহ মহান, তাঁর স্ত্রী বা পুত্র থাকতে পারে না। তবে আল্লাহ কুরআনে আমাদের বলেছেন যে, ঈসা 'আলাইহিস একজন নবী ছিলেন, যাকে আল্লাহ অনেক অলৌকিক ঘটনা দিয়েছেন এবং আল্লাহ তাঁকে তাঁর কওমের লোকেদেরকে একমাত্র আল্লাহর ইবাদত (উপাসনা) করার জন্য আহ্বান করতে পাঠিয়েছেন, যার কোনো শরীক নেই। তিনি আমাদের বলেছেন যে, ঈসা 'আলাইহিস সালাম মানুষদেরকে তাঁর ইবাদত (উপাসনা) করতে বলেননি; বরং তিনি নিজেই তাঁর স্রষ্টার ইবাদত (উপাসনা) করেছেন।
ইসলাম সাধারণ প্রকৃতি এবং সুস্থ মনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ধর্ম। পক্ষপাতহীন অন্তরসমূহ সহজে এটি গ্রহণ করে। মহান সৃষ্টিকর্তা তাঁর সৃষ্টির জন্য এটি মনোনীত করেছেন এবং এটি সমস্ত মানুষের জন্য কল্যাণ ও সুখের ধর্ম। ইসলাম এক জাতিকে অপর জাতির ওপর এবং এক বর্ণকে অপর বর্ণের ওপর প্রাধান্য দেয় না। ইসলামের ভেতর মানুষ তার ভাল কাজের পরিমাণ ছাড়া অন্যদের থেকে বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত হয় না।
প্রত্যেক বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তিকে অবশ্যই আল্লাহকে রব হিসাবে, ইসলামকে দীন (ধর্ম) হিসেবে এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূল হিসাবে বিশ্বাস করা ফরয। এটি মেনে নেওয়া এমন একটি ফরয, যার উপর কোন ব্যক্তির কোনো স্বাধীনতা নেই। কেননা সে রাসূলগণকে কী উত্তর দিয়েছে সে সম্পর্কে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকে জিজ্ঞাসা করবেন। যদি সে মুমিন (বিশ্বাসী) হয়, তবে তার জন্য রয়েছে মহান বিজয় ও সফলতা। আর যদি সে কাফির (অবিশ্বাসী) হয়, তবে তার জন্য রয়েছে স্পষ্ট ধ্বংস ও ক্ষতি।
আর যে ব্যক্তি ইসলামে প্রবেশ করার ইচ্ছা করে, তার কর্তব্য হলো নিম্নোক্ত কালিমার অর্থ জেনে এবং তার প্রতি বিশ্বাস রেখে বলা: أشهد أن لا إله إلا الله وأشهد أن محمدًا رسول الله 'আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো প্রকৃত ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল।' এভাবে সে একজন মুসলিম হয়ে যাবে। এরপরে ধীরে ধীরে শরী'আতের বাকি বিধি-বিধান শিখবে, যাতে করে আল্লাহ তার উপরে যা আবশ্যক করেছেন তা সে পালন করতে পারে।
আরো জানতে ভিচিট করুন: byenah.com